গ্রেফতার হওয়া আলোচিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও কথিত মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে বলেছেন ওদের ডাকে চলচ্চিত্র ও নাটকের বহু অভিনেত্রীই নিয়মিত ওদের ফ্ল্যাটে যেতেন এবং মোটা অংকের বিনিময়ে খদ্দেরদের সাথে একান্ত সময় কাটাতেন।
আটককৃত এই দুই আলোচিত নারী আরো বলেছেন চলচ্চিত্র, নাটক কিংবা মডেলিংয়ে একবার নাম লেখাতে পারলেই বিত্তবান ক্লায়েন্টদের কাছে ওদের রেইট বেড়ে যায়। মিডিয়ার বাইরের একটা মেয়ে যদি একজনের কাছ থেকে ২-৩ হাজার টাকা পায় তাহলে ওই একই মেয়ে কোনমতে মিডিয়ায় নাম লেখালেই তার রেইট হয়ে যায় ২৫-৫০ হাজার এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাখ টাকা। তাদের দাবী, চলচ্চিত্রের এই মন্দা সময়ে অধিকাংশ নায়িকা অনৈতিক পথেই লাখ-লাখ টাকা কামাই করে বিলাসী জীবন যাপন করছেন।
আরো জানা গেছে, কোভিডের আগে প্রায় প্রতি মাসেই ঢাকার শোবিজ জগতের নারী সদস্যরা বিভিন্ন বিত্তবান ক্লায়েন্ট এর সাথে বিদেশে প্রমোদ ভ্রমণে যেতেন। দুই কিংবা তিনদিনের ওই প্রমোদ ভ্রমণের জন্যে ওরা দুই লাখ থেকে শুরু করে ১০-১৫ লাখ টাকাও নিয়েছেন। এই বিদেশ ট্যুরই ছিলো অনেকের আয়ের মূল উৎস। এখন কোভিদের কারণে বিদেশ ট্যুরে ভাটা পরায় ওই নায়িকা এবং মডেলরা হয় নিজেদের ফ্ল্যাটেই ক্লায়েন্টদের মনোরঞ্জন করছেন অথবা পিয়াসা-মৌ দের মতো হাই প্রোফাইল দালালদের আস্তানায় গিয়ে গোপনে সময় দিচ্ছেন।
নির্ভরযোগ্য আরেকটি সূত্র জানায়, ঢাকার শোবিজ জগতে এরই মাঝে ইয়াবার নেশা মারাত্মক হারে বেড়ে গেছে। বেশিরভাগ অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং মডেলরা ইয়াবা আসক্ত। এদের কেউকেউ নেশা করার পাশাপাশি ইয়াবা বিক্রীর সাথেও জড়িত।
মরিয়ম আক্তার মৌ এর মতো একজন অখ্যাত নারী কিভাবে ঢাকা শহরে এতো বিলাসী জীবন যাপন করছেন তা দেখে অনেকেই হতবাক। শহরের মোহাম্মদপুর এলাকায় তিনি ফাইভ স্টার হোটেলের আদলেই নিজের ফ্ল্যাট সাজিয়েছেন লাখ-লাখ টাকা খরচ করে। সেখানে যারা আসতেন, তারা সবাই একরাতে কম করে হলেও লাখ টাকা খরচ করতেন। আবার এদের অনেকেই পড়তেন ব্ল্যাকমেইলিং এর ফাঁদে। বিত্তবান ক্লায়েন্টদের ব্ল্যাকমেইলিং করে মৌ-পিয়াসারা কোটিপতি বনে গেছেন। এদের অনেকেরই বাংলাদেশের বাইরেও ভারত এবং থাইল্যান্ডে নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ক্লায়েন্টদের থাকার ব্যবস্থার পাশাপাশি মনোরঞ্জনের সব আয়োজন আছে। একটা ফ্ল্যাটে একরাতের ভাড়া বাংলাদেশী টাকায় ২০-২৫ হাজার। অনেক নায়িকা এবং মডেল, যারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্লায়েন্ট এর মনোরঞ্জনের জন্যে বিদেশে যান, ওরা গোপনীয়তার স্বার্থে হোটেলের পরিবর্তে ওই ফ্লাটগুলোতেই ওঠেন।
আরো জানা গেছে, এসব হাই প্রোফাইল বিতর্কিত নারীরা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিত্তবান আরবদের কাছেও বাংলাদেশী মডেল ও নায়িকাদের সরবরাহ করে থাকেন।
Leave a Reply